পিএম বাংলায় আপনাকে স্বাগতম! শারীরিক সমস্যা, মানসিক চাপ সহ একাধিক সমস্যার সমাধানে আমাদের এই বিভাগ। পুষ্টি এবং ব্যায়াম থেকে শুরু করে মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামগ্রিক সুস্থতা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে আপনাকে তথ্য ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য আমাদের এই বিভাগ। এখানে, আপনি স্বাস্থ্যের সাম্প্রতিক গবেষণা এবং উন্নয়ন সম্পর্কে জানতে পারবেন। সেইসাথে আপনার জীবনধারার উন্নতির জন্য পরামর্শ দেওয়া হবে।
মানসিক চাপ কি?
মানসিক চাপ হল একটি সাধারন অনুভূতি মাত্র। যখন কোনো কাজ, জীব-জন্তু, মানুষ অথবা কোনো ঘটনাকে হুমকিস্বরূপ মনে করা হয় সেটিই হল স্ট্রেস রেসপন্স বা মানসিক-চাপের প্রতিক্রিয়া। মানসিক চাপ যদি কম থাকে তবে মানুষের শরীরে তেমন কোনো সমস্যা হয় না বরং সেটি মানুষকে কাজে উদ্বুদ্ধ হতে সাহায্য করে। কিন্তু মানসিক-চাপ বাড়লে মানুষের শরীরের নানা রোগের সৃষ্টি হয়। আজকে আমরা মানসিক চাপ কমানোর বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো।
মানসিক চাপ কেন হয়?
আমরা প্রতিটা মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময় মানসিক-চাপ অনুভব করি। আর এই মানসিক চাপ কখনো যা মৃদু, মাঝারি বা গুরুতর ইত্যাদি বিভিন্ন পর্যায়ের হতে পারে। আমরা এখন এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি যা প্রতিনিয়ত মানুষের মানসিক চাপ বাড়ছে। মানসিক-চাপ যদি সামান্য হয় সেটা মানুষের ক্ষতি করেনা কিন্তু এটি যদি বাড়তে থাকে তবে মানুষকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মানসিক -চাপ বেশি হলে মানুষের নানা রোগের সৃষ্টি হয় যেমন হৃদরোগ, ডাইবেটিস, আর্থারাইটিস প্রভৃতি। মানসিক চাপের লক্ষণ গুলি হল রাগ, বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগ। গ্যাস অম্বল, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের সমস্যা, বুকজ্বালা এবং পেট-ফাঁপাসহ পাকস্থলীর সমস্যা। এছাড়াও রয়েছে পিঠে ব্যথা, মাথাধরা এবং চোয়াল ব্যথার মত পেশীর সমস্যা। এইবার তাহলে জেনে নেওয়া যাক এই মানসিক চাপ থেকে আমরা কিভাবে মুক্তি পাবো?
চাপ কমানোর উপায়ঃ
ব্যায়াম- প্রতিদিন ব্যায়াম অভ্যাস করলে মানুষের মানসিক চাপ কমে যায়। প্রতিদিন ব্যায়াম অভ্যাস করলে এন্ডোরফিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয় যা আমাদের মানসিক চাপ কমায় এবং আমাদের মনে আনন্দের সৃষ্টি করে।
মিউজিক থেরাপি- গান মানুষের মনে আনন্দের সৃষ্টি করে। যদি প্রতিদিন একটি করে সুন্দর মিউজিক মন দিয়ে শোনেন তবে আপনার মন আনন্দে ভরপুর হয়ে উঠবে। গান আমাদের ব্রেনে ডোপামিন নামে একটি রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে , আর এই রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণের ফলে মুড উজ্জীবিত হয় এবং মানসিক চাপ কমে যায়।
সর্বদা হাসি খুশি থাকা- নিজের মনকে সবসময়ই আনন্দে রাখার জন্য সদা সর্বদা হাসিখুশি থাকা উচিত। হাসি খুশি থাকলে মনের সাথে শরীরেও কোনো সমস্যা হয় না।
ধ্যান- ধ্যান মনকে উত্তেজনা মুক্ত করে শান্ত করে। প্রতিদিন ধ্যান করার ফলে শরীর ও মনের উপর চাপের প্রভাবের কুফলগুলি কমতে শুরু করে। ধ্যান অভ্যাসের ফলে মানুষ তাদের বিকৃত চিন্তাভাবনা থেকে দূরে থাকে।
কয়েকটি পদ্ধতিঃ
শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা- মানসিক চাপ যখন তীব্র হয় তখন মানুষের হার্টবিট বাড়ে, এমনকি মানুষ খুব উত্তেজিত হয়ে পড়ে, তখন মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বাড়তে থাকে। কিন্তু এই সময়ে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা উচিত। শ্বাস গভীরভাবে গ্রহণ করে তা ত্যাগ করা হলে চাপ কমে।
প্রাতঃভ্রমন-প্রতিদিন সকালবেলায় হাঁটা মানুষের শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। প্রতিদিন সকালে যদি হাঁটা অভ্যাস করা হয় তাহলে দেখবেন মানুষের মনের চাপ দূর হয়ে মন হাসিখুশিতে ভরে ওঠে।
অ্যারোমোথেরাপি- শরীর ও মনকে চাঙ্গা করতে অ্যারোমো থেরাপির ভূমিকা অপরিসীম। এই অ্যারোমো থেরাপিতে বিভিন্ন সুগন্ধি তেল ব্যবহার করে মানুষের মনের চাপ দূর হয়।
লেখা অভ্যাস করা- লেখা মনের ভাব প্রকাশ করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন নিজের মন থেকে কোন একটি বিষয়ে সুন্দর করে লিখলে দেখবেন চাপ অনেকটাই কমে যায়।
অভ্যাস করুনঃ
স্বাস্থ্যকর খাদ্য- সুন্দর জীবনধরণের জন্য সব সময় স্বাস্থ্যকর খাবারের দরকার খুবই। মানসিক-চাপ বাড়লে তেল মশলা জাতীয় খাবার না খেয়ে হালকা খাবার খেলে দেখবেন শরীর অনেকটাই ভালো হয়ে যায়।
ম্যাসাজ- মানসিকচাপ বাড়লে আমাদের পেশিতে টান ধরে। আর এই পেশির টান কমানোর জন্য ম্যাসাজের ভূমিকা অপরিসীম।
সমস্যা বেশি হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আপনার এই বিষয়ে কোনও প্রশ্ন ও উপরের প্রতিবেদন টি কেমন লেগেছে, জানাতে হলে নিচে কমেন্ট করুন।