Top 10 Healthy Foods In The World : বিশ্বের সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবার কোনগুলো জানেন কি? বিশ্বের এই ১০ খাবারের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে সেরা পুষ্টিগুণ

বিশ্বের সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবার কোনগুলো জানেন কি? বিশ্বের এই ১০ খাবারের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে সেরা পুষ্টিগুণ (Top 10 Healthy Foods In The World)। আজ আমরা আপনাদের এমন ১০টি খাবারের নাম বলব যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে পুষ্টিকর খাদ্যের তালিকায় আসে। এই খাদ্য উপাদানগুলি দেহের সমস্ত অংশের চাহিদা ঘাতটি পূরণ করে । এর মধ্যে কিছু খাদ্য খুব সুস্বাদু এবং কিছু খাদ্য স্বাদহীন মনে হতে পারে। কোন খাবারে পুষ্টি নেই, এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুব একটা সহজ নয়। আমরা যেসব ফল বা শাকসবজি খেয়ে থাকি তাদের প্রত্যেকটিতে কিছু না কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে।

কিন্তু এমন কিছু খাবার আমাদের পৃথিবীতে রয়েছে, যার পুষ্টির পরিমাণ এত বেশি যে এগুলো সুপারফুড হিসেবে সকলেই চিনে থাকেন। নিয়মিত এসব পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেলে দেহের সমগ্র স্বাস্থ্যের উন্নয়ন হয় ও রোগ থাকে বহুদূরে।তাই আজ আমরা আপনাদের এমন কিছু ১০টি খাবারের নাম বলব যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে পুষ্টিকর (Top 10 Healthy Foods In The World)। এই খাদ্য উপাদানগুলি দেহের সমস্ত অংশের চাহিদা ঘাতটি পূরণ করে। এর মধ্যে কিছু আপনাকে খুব সুস্বাদু এবং কিছু স্বাদহীন মনে হতে পারে। তবে আপনি যদি এগুলিকে আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করেন তবে এটি আপনাকে সম্পূর্ণ সুস্থ রাখবে।

Top 10 Healthy Foods In The World

সামুদ্রিক মাছ

মাছ খেতে কমবেশি সকলেই পছন্দ করেন। তবে আপনি কি জানেন, কিছু মাছ বিশ্বের সেরা ১০টি খাদ্য উপাদান গুলির মধ্যেও গণ্য হয় (Top 10 Healthy Foods In The World)। তবে সব মাছ সালমন এবং সার্ডিনের মতো পুষ্টিকর নয়। এই দুটি মাছই আপনাকে মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।

আজকের সময়ে, এটি হৃদপিণ্ডের যত্ন নেওয়া বা এটি সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই মাছগুলি গ্রহণ করে, আপনি ডিমেনশিয়া এবং আলঝেইমার জাতীয় রোগ থেকেও বাঁচতে পারেন। আপনি যদি নিয়মিত সালমন সেবন করেন তবে এটি হতাশা বা স্ট্রেস থেকে আপনাকে রক্ষা করবে ।

রসুন সেরা তালিকায় রয়েছে

রসুন বিশ্বের সেরা ১০টি খাদ্য উপাদান গুলির মধ্যে গণ্য হয় (Top 10 Healthy Foods In The World)। বহু শতাব্দী ধরে রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, এটি আমাদের রান্নারও একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। রসুনে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, কপার ম্যাঙ্গানিজ এবং সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ। বলা হয় রসুনের বৈশিষ্ট্যগুলি দাঁত বা মস্তিস্কের পক্ষে উপকারী।

এ ছাড়া রসুনের অভ্যন্তর উপাদানগুলি (Healthy Foods) আপনার শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করতে সাহায্য করে। রসুন আপনাকে কোলন ক্যানসার এবং পেটের ক্যানসার থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। কাঁচা রসুন বহু শতাব্দী ধরে অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

বাদামের বহু গুণ

বাদাম বিশ্বের সেরা ১০টি খাদ্য উপাদান গুলির মধ্যে গণ্য হয় (Top 10 Healthy Foods In The World)। বাদাম আপনার শরীরকে পুরোপুরি সুস্থ রাখতে পারে। এটি জানা যায় যে বাদামের অভ্যন্তরে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ই, তামা, ম্যাগনেসিয়াম এবং রাইবোফ্লাভিন পাওয়া যায়। এছাড়াও, বাদাম পটাসিয়াম, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন বি, নিয়াসিন, থায়ামিন এবং ফলিক অ্যাসিডের একটি দুর্দান্ত উৎস ।

মানুষ বিভিন্ন উপায়ে বাদাম খেয়ে থাকে। তবে ভেজানো বাদাম খাওয়া সবচেয়ে উপকারী বলে মনে করা হয়। বাদাম আপনাকে বিভিন্ন ধরণের অ্যামিনো অ্যাসিড দেয়।যা পেশী পুনরুদ্ধারের জন্য উপকারী। এটি খারাপ কোলেস্টেরলের একটি দুর্দান্ত অস্ত্র। বাদামের মাধ্যমে খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করা যায়। বাদামে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে যা হাড়কে মজবুত রাখতে সহায়তা করে।

বেশি পরিমাণে সেলেনিয়াম আপনাকে স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন ই কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। আপনার যদি ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে তবে এটি আপনার পক্ষে খুব উপকারী। এতে উপস্থিত ফাইবার এবং প্রোটিন শরীরে চিনির মাত্রা বজায় রাখে, যা ডায়াবেটিসের রোগীদের উপকার করে।

বাঁধাকপি

বাঁধাকপি বিশ্বের সেরা ১০টি খাদ্য উপাদান গুলির মধ্যে গণ্য হয় (Top 10 Healthy Foods In The World) । বাঁধাকপি এবং ব্রোকলি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী বলে মনে করা হয়। সব ধরনের বাধাকপি রয়েছে পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে লাল বাধাকপিতে বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে। এছাড়া চাইনিজ বাধাকপি রয়েছে যা একটু লম্বাটে ধরনের হয়, এতে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। এই সবজিতে ভিটামিন সি, ফাইটোনিট্রিয়েন্টস, ফোলেট ভিটামিন ই এবং ফাইবার জাতীয় পুষ্টি থাকে। যা আপনাকে অনেক রোগ থেকে রক্ষা করে।

Winter Decorating Ideas – এইভাবে বাড়ির ইন্টেরিয়র ডিজাইন বদলে ফেলুন। শীত ঘরে ঢুকতেই পারবে না।

আপনি কি চিয়া বীজ সম্পর্কে জানেন?

চিয়া বীজ (Top 10 Healthy Foods In The World) আপনাকে অনেক মারাত্মক রোগ থেকে দূরে রাখতে এবং সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। চিয়া বীজগুলিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যামিনো অ্যাসিড এবং প্রোটিন রয়েছে। এটি ছাড়াও এটি ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড, শর্করা এবং ফাইবারের একটি ভালো উৎস (Healthy Foods).

এছাড়াও এই ছোট বীজে ক্যালসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। সমীক্ষা অনুসারে, নিয়মিত চিয়া বীজ গ্রহণ হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। চিয়া বীজ দুগ্ধজাত পণ্যের একটি দুর্দান্ত বিকল্প হিসাবেও বিবেচিত হয়। কারণ এগুলিতে উচ্চ পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এটি রক্তে চিনির উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হিসাবেও বিবেচিত হয়।

Home Decoration Tips (ঘর সাজানোর আইডিয়া)

চিনাবাদাম

চিনাবাদাম বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ১০ টি পুষ্টিকর খাদ্যের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে (Top 10 Healthy Foods In The World) । চিনাবাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন বি এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। আপনি এই সমস্ত উপাদানগুলি চিনাবাদাম এবং চিনাবাদামের মাখনে পাবেন। এ ছাড়া চিনাবাদামের অভ্যন্তরে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ খুব কম।

গর্ভাবস্থায় মহিলাদের বায়োটিনের প্রয়োজন হয় যা আপনি চিনাবাদামের ভিতরে খুঁজে পান। চিনাবাদাম ত্বকের জন্য যেমন উপকারী হিসাবে বিবেচিত হয় তেমনি এন্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। চিনাবাদামের অভ্যন্তরের যে বৈশিষ্ট্যগুলি পাওয়া যায় সেগুলি হৃদয়ের যত্ন নিতেও সক্ষম বলে মনে করা হয়। চিনাবাদামের বৈশিষ্ট্যগুলিও কোলেস্টেরল হ্রাস করতে সহায়তা করে।

কালো রাজমার নাম শুনেছেন নিশ্চই

বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ১০ টি পুষ্টিকর খাদ্যের তালিকায় কালো রাজমার হচ্ছে অন্যতম (Top 10 Healthy Foods In The World) । খুব কম লোক কালী রাজমা ব্যবহার করেন। তবে এর ভিতরে থাকা পুষ্টিগুলি অত্যন্ত চকচকে। এটি আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ফাইবার এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ।

এর সুবিধাগুলি এরকম। কালী রাজমার ভিতরে থাকা উপাদানগুলি আপনার হাড় এবং জয়েন্টগুলি সুস্থ রাখতে সহায়ক। এতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস সহজেই রক্তচাপের ভারসাম্য বজায় রাখে। ফাইবার সমৃদ্ধ কালো মটরশুটি শরীরে ইনসুলিন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তে চিনির মাত্রা বাড়তে বাধা দেয়। কালো মটরশুটি আপনার অন্ত্রের জন্যও উপকারী।

সবুজ শাকসবজি

বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ১০ টি পুষ্টিকর খাদ্যের তালিকায় সবুজ শাকসবজি হচ্ছে অন্যতম (Top 10 Healthy Foods In The World) । আপনি অবশ্যই সবুজ শাকসবজির গুণ সম্পর্কে জানেন। সবুজ শাকসব্জির ভিতরে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ, আয়রন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। এগুলি ছাড়াও সবুজ শাকসব্জীতে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস (Healthy Foods) হিসাবে বিবেচিত হয়।

এটি এর বৈশিষ্ট্য যেমন ফাইটোকেমিক্যালস এবং বি-ক্যারোটিন ফ্ল্যাভোনয়েডগুলির জন্যও পরিচিত। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে সবুজ শাকসবজি কেবল হার্ট সম্পর্কিত সমস্যাগুলি হ্রাস করে না, ক্যানসারের মতো রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। এগুলির মধ্যে ভিটামিন A আপনার চোখের জন্য উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে।

আমন্ড ও আখরোট

বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ১০ টি পুষ্টিকর খাদ্যের তালিকায় আমন্ড ও আখরোট হচ্ছে অন্যতম (Top 10 Healthy Foods In The World) । আমন্ড ও আখরোট বাদাম হিসাবেও পরিচিত। আমন্ড ও আখরোটকে প্রোটিন, পটাসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভাল শ্রোতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

এই উপাদানগুলির কিছু সুবিধা নিম্নরূপ। হার্ট অ্যাটাকের কারণে ফোলাভাব ঘটে যা আমন্ড ও আখরোট বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর বলে বিবেচিত হয়। এটি রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধেও সহায়তা করে। খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সহায়ক। অন্ত্রের ভালো ব্যাকটিরিয়া বাড়ায়। চিনির স্তর নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।ব্রিটিশ গবেষকদের পুষ্টিকর ১০০ খাবারের তালিকার শীর্ষে রয়েছে এই বাদাম দুটি। ফ্যাটি অ্যাসিডের সবচেয়ে ভালো উৎস (Healthy Foods) আমন্ড ও আখরোট। হার্ট ভালো রাখতে ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করায় এদের জুড়ি মেলা ভার।

দই

বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ১০ টি পুষ্টিকর খাদ্যের তালিকায় দই হচ্ছে অন্যতম (Top 10 Healthy Foods In The World) । দই খাওয়া কেবল উপকারী নয়, এটি আপনার খাবারকেও সুস্বাদু করে তোলে। দই এর ভিতরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এছাড়াও, দইতে প্রোবায়োটিক বৈশিষ্ট্যও রয়েছে যা ভাল ব্যাকটিরিয়া বাড়াতে এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া হ্রাস করতে কাজ করে।

এটি পেটকে ঠান্ডা করে এবং পেট সম্পর্কিত অনেক রোগ থেকে রক্ষা (Healthy Foods) করে। খাবারের সঙ্গে প্রতিদিন দই খাওয়া আপনাকে সুস্থ রাখবে। এখন আপনি যদি এই সমস্ত খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের কথা ভাবছেন তবে মনে রাখবেন যে কোনও কিছুর অতিরিক্ত ব্যবহার কেবল ক্ষতিকারক। অতএব, এই উপাদানগুলি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পরিমাণে গ্রাস করুন।

মানসিক চাপ উপশমের জন্য ১০ টি প্রাকৃতিক উপায়, টেনশন এবার বিদায় নেবে।

পুষ্টিকর খাবারের উপকারিতা

খাদ্যের বিভিন্ন উপাদান ও উপকারিতা

পুষ্টিকর খাবারের উপকারিতা : আমাদের দৈনিক কাজকর্ম, চিন্তাভাবনা ও শারীরিক পরিশ্রমের জন্য দেহের ক্ষয় হয়, খাদ্য সেই ক্ষয় পূরণ করে। তাই দেহের পুষ্টির জন্য খাদ্য একান্ত প্রয়োজন।খাদ্যদ্রব্য মানুষের জীবনের ভিত্তি ও প্রধান অবলম্বন। ভালো খাওয়া দাওয়া ভালো স্বাস্থ্য, কর্মসামর্থ্য ও দীর্ঘ পরমায়ু লাভের উপায়। কিন্তু ভালো ভালো খাদ্য (Healthy Foods) খেলেও দেখা যায় শরীরে অনেক ক্ষেত্রে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। খাদ্য সুষম (ওয়েল ব্যালেন্সড) হওয়া প্রয়োজন। কোন কোন খাদ্য কী কী উপাদান বর্তমান তা জানা প্রয়োজন। খাদ্যের মান নির্ণয় করে খাদ্যকে ছ’টি উপাদানে ভাগ করা হয়েছে। নীচে খাদ্যের উপাদান ও তাদের উপকারিতা সম্বন্ধে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল —

১) প্রোটিন (আমিষজাতীয় খাদ্য)

মাছ, ডিম, মাংস, চিজ, সোয়াবিন, চিনাবাদাম, ডাল, দুধজাতীয় খাদ্য ছানা প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়।

উপকারিতা

শরীরের তাপ উৎপাদন, দেহের হজমক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ, দেহতন্তুর ক্ষতিপূরণ ও শরীরস্থ উপাদানসমূহ নির্মাণ প্রোটিন খাদ্যের কাজ। শরীর গঠনের জন্য প্রোটিন (Healthy Foods) অপরিহার্য। আমাশয় রোগে প্রোটিন বিশেষ প্রয়োজন।

তা ছাড়া শরীরের বৃদ্ধি (গ্রোথ), দেহের পুষ্টি এবং মেধা বাড়ানোর জন্য সহায়ক।

২) কার্বোহাইড্রেট (শর্করাজাতীয় খাদ্য)

চাল, চিনি, আটা, ময়দা, মিষ্টি, মধু, আম, আলু, মিছরি, গুড়, চিড়া, মুড়কি, সাগু, বার্লি ইত্যাদিতে কার্বোহাইড্রেট বর্তমান।

উপকারিতা

দৈনিক শক্তি, কর্মে উদ্যম, তাপ উত্পাদন ও চর্বি গঠন কার্বোহাইড্রেটের প্রধান কাজ। এই জাতীয় খাদ্যই আমাদের দেহ গঠন ও সংরক্ষণের প্রধান উপাদান। যাদের রোগা শরীর তাদের মেদ বৃদ্ধির জন্য এটি বিশেষ প্রয়োজনীয়।

৩) ফ্যাট বা চর্বি (স্নেহজাতীয় খাদ্য)

মাংসের চর্বি, মাখন, হোল মিল্ক, আইসক্রিম, বাদাম, তেল, ঘি, বনস্পতি, নারকেল তেল প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে চর্বি রয়েছে।

উপকারিতা

কাজে উত্সাহ ও তত্পরতার জন্য ফ্যাট অপরিহার্য। শরীরের উত্তাপ উত্পাদন এবং চর্বি প্রস্তুতকরণ এই জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ। দেহের কমনীয়তা রক্ষা ও দেহলাবণ্যের জন্য চর্বির প্রয়োজন খুব বেশি।

৪) মিনারেলস (লবণজাতীয় খাদ্য)

মাছ, শুকনো খাবার, মোওয়া, শুকনো ফল, সরষে, সবজি, সবুজ শাক, মোচা, কাঁচকলা, ডুমুর, খাদ্যলবণ প্রভৃতিতে মিনারেলস জাতীয় খাদ্য বর্তমান। এ ছাড়াও ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও লোহাজাতীয় খাদ্য এতে বর্তমান।

উপকারিতা

লবণঘটিত উপাদান খাদ্যমাধ্যমে আমাদের রক্তে সঞ্চিত হয়। এটি রক্তবর্ধক। ক্যালসিয়ামের অভাবে অস্থিরোগ, রিকেটস ইত্যাদি হয়। ক্যালসিয়াম রক্ত জমাট বাঁধতে, দাঁত গঠনে ও রক্ষণে সহায়ক।

Parenting Tips – চঞ্চল সন্তানকে শান্ত, নম্র ও ভদ্রতা শেখাবেন কিভাবে? জেনে নিন সহজ উপায়।

৫) ভিটামিন (খাদ্যপ্রাণ)

আমাদের শরীরের ভিটামিনের প্রয়োজন খুব বেশি। প্রয়োজন হিসেবে ভিটামিনকে কয়েক শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। নিম্নে আলোচনা করা হল —

ভিটামিন ‘এ’ —পেঁপে, পাকা আম, মাখন,গাজর, টমেটো, তোল, পালংশাক, ইলিশ মাছ ও কড লিভার প্রভৃতিতে ভিটামিন ‘এ’ বর্তমান।

উপকারিতা : মুখের ব্রণ, শরীরের বাড়বৃদ্ধি, পেটের অসুখ, রাতকানা, প্রভৃতিতে বিশেষ উপকারী।

ভিটামিন ‘বি’ — ভুট্টা, কড়াইশুঁটি, সিম,মুগডাল, ভেজানো ও অঙ্কুরিত ছোলা, ডিমের কুসুম, পালংশাক প্রভৃতিতে প্রচুর ‘বি’ ভিটামিন বর্তমান।

উপকারিতা : নার্ভ ও মস্তিষ্কের দুর্বলতা, নার্ভের ব্যথা, একটুতে রেগে যাওয়া, অলসতা, দৈহিক ও মানসিক পরিশ্রম, অজীর্ণ ও কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদিতে ভিটামিন ‘বি’ জাতীয় খাদ্যের প্রয়োজন খুব বেশি।

ভিটামিন ‘সি’ ­ টকজাতীয় ফল, তেঁতুল, কমলালেবু, মুসাম্বিলেবু, বাতাবি লেবু, পেয়ারা, আমলকি, আনারস, আখের রস প্রভৃতিতে ভিটামিন ‘সি’ বর্তমান।

উপকারিতা : দাঁতের রক্তপড়া,সর্দিকাশি, রক্ত চলাচলের পথকে সুগম করা, শরীরের ব্যথা ও ব্লাডপ্রেসারে খুব উপকারী।

ভিটামিন ‘ডি’ — ডিমের কুসুম, ঘি, মাখন, দুধ,সূর্যের আলো, কড লিভার অয়েল ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়।

উপকারিতা : হাড় বৃদ্ধিতে ভিটামিন ‘ডি’-এর প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। যাদের দাঁতে পোকা হয়, রিকেট রোগ, মাংসপেশির খিঁচ ধরে তাদের এই ভিটামিন ‘ডি’ উপকারী। ছোটো ছেলেমেয়েদের জন্য ভিটামিন ‘ডি’ এর প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি।

ভিটামিন ‘ই’ ­ বিন, বুটজাতীয় (মটরশুঁটি),অঙ্কুরিত ছোলা, কড়াইশুঁটি, সিমের বিচ প্রভৃতি খাদ্য ও সোয়াবিন প্রভৃতিতে ভিটামিন ‘ই’ বর্তমান।

উপকারিতা : প্রজনন গ্রন্থির বৃদ্ধি ও রক্তসঞ্চারের সহায়ক, মেয়েদের গর্ভস্থ সন্তানের পুষ্টির জন্য ভিটামিন ‘ই’ এর বিশেষ প্রয়োজন।

ভিটামিন ‘কে’ ­ — নানা জাতীয় শাকে ভিটামিন ‘কে’ বর্তমান।

উপকারিতা : এই ভিটামিন রক্ত জমাতে সহায়তা করে। অধিক রক্তপাত বন্ধ করাতে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য রোগেও উপকারী।

৬) জল

শোথ, উদরী প্রভৃতি ব্যতীত অধিকাংশ রোগেই জল উত্তম পথ্য। শরীরের অপরাপর ক্রিয়ায় সহায়ক হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য ও প্রস্রাব পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।

দ্রষ্টব্য : এক গ্লাস জল (সম্ভব হলে ঈষৎ উষ্ণ জল ) খেয়ে পবনমুক্তাসন করলে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভালো ফল পাওয়া যায়।

একটা কথা সর্বদা মনে রাখা প্রয়োজন যে, শুধু খাদ্য খেলেই হয় না। খাদ্যকে শরীরে গ্রহণ করারও ক্ষমতা থাকা চাই। শরীর যদি খাদ্যকে গ্রহণ না করে তবে প্রচুর খেলেও শরীরের পুষ্টিসাধন হয় না। অথবা অতিরিক্ত খাদ্য মেদ বা চর্বিতে রূপান্তরিত হয়। শরীরকে খাদ্য গ্রহণ করার উপযুক্ত করে তুলতে হলে আসন ও পরিমিত ব্যায়ামের প্রয়োজন। আসন ও ব্যায়াম করলে ভালো হজম হওয়া এবং শরীরে খাদ্য গ্রহণ করার ক্ষমতা জন্মায়। এ জন্য নিত্য কিছু না কিছু আসন ও ব্যায়াম করা অপরিহার্য।

Leave a Comment