সোনা বন্ধক রেখে লোন নেবেন বলে ভাবছেন? ঠকবেন না! যদি ঋণ নেওয়ার আগে এই বিষয়গুলি খেয়াল রাখেন। নির্দেশ দিল RBI। বর্তমান কালে টাকার প্রয়োজন হয় সবারই। হঠাৎ করে টাকার প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রে ঋণ গ্রহণ করাই একমাত্র রাস্তা বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। কম-বেশি সবার ঘরেই সোনা দানা থাকে। মধ্যবিত্তদের কাছে সোনার সম্পদসম। সোনা বন্ধক রেখে প্রয়োজনে ঋণ নেওয়া যায়। সোনার গয়নার দাম যে হারে বাড়ছে, সেখানে সোনা কিনে তাকে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করাই যুক্তিসম্মত। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায়, সোনা বন্ধক রেখে ঋণ নিতে গিয়ে অসুবিধায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। আর এই সমস্যার সমাধানে এবার মাঠে নামলো দেশের শীর্ষ ব্যাংক আরবিআই (RBI)।
দিন দিন সোনার দাম ঊর্ধ্বমুখী। যে হারে সোনার দাম বাড়ছে, তাতে সোনা কিনে তাকে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করছেন অনেকেই। তাছাড়া আগেই লকারে থাকা সোনা সবার কাছেই বিপদের দিনে সাহায্যকারী হয়ে দাঁড়ায়। সোনা বন্ধক রেখে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ঋণ নেন আমজনতা। দেশের সরকারি ও বেসরকারি বহু প্রতিষ্ঠান সোনা বন্ধক রেখে ঋণ দেয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, গ্রাহকদের ঠকিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করেন তারা। এমন অভিযোগ আজকে নতুন নয়। এর আগেও বহুবার সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অনেকেই বিষয়টির অভিযোগ জানান।
সাধারণ মানুষ তার প্রয়োজনমতো লোন নেন। কারোর যদি একসাথে অনেক টাকার লোন লাগে, তাহলে গ্যারেন্টার ছাড়া লোন দেয় না কোন সংস্থা। যদি বেশি টাকার লোন লাগে, তাহলে অনেকেই সোনা দিয়ে ঋণ নেন তথা গোল্ড লোন গ্রহণ করেন। কিন্তু গোল্ড লোন নেওয়ার পর অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন যে, সংস্থা সোনা বন্ধক রেখে তুলনামূলক কম টাকা দিয়েছে সেই ব্যক্তিকে। অর্থাৎ গ্রাহককে ঠকিয়ে কারচুপি করেছে সংস্থা।
একদিকে যেমন কারচুপির অভিযোগ উঠছে তেমনই অনেকেই এই বিষয়ে অভিযোগ তুলেছেন যে, সোনা বন্ধক রাখার পর তাদের সোনার গুণগত মান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এরকম বহু অভিযোগ বছরের পর বছর ধরে জামা পড়ছে। অবশেষে বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসলো রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)।জনসাধারণের স্বার্থে অর্থ দপ্তর ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া গোল্ড লোনের ক্ষেত্রে কড়া নজরদারি করতে চলেছে।
গোল্ড লোন দেওয়া সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এসেছে। অনেক সময় জানা যায়, এই সংস্থাগুলি প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত। প্রচুর গ্রাহকদের প্রতারণা করেছেন তারা। অনেক সংস্থা ইচ্ছে করে সোনার দাম কম দেখিয়ে তুলনামূলক কম টাকা দিয়েছেন গ্রাহককে। আর এই সকল কারণে ঠকে গিয়েছেন বহু সাধারণ মানুষ। সাম্প্রতি গোল্ড লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছে। সোনা ঋণ নেওয়ার আগে সতর্ক হতে হবে আপনাকেও।
বহু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে যে, তাঁরা ইচ্ছে করে সোনার দাম কম করে রাখে। যাতে গ্রাহককে কম টাকা ঋণ দিতে হয়। আবার অনেক সংস্থা স্বর্ণ ঋণ দিয়ে সাধারণ মানুষের কাঁধে চাপাচ্ছে মোটা টাকা সুদের হার। আর এই সকল কারণে রীতিমতো বিরক্ত সাধারন মানুষ। ব্যাংকের গোল্ড লোনের জন্য সুদ ধার্য থাকে ৮.৭৫ শতাংশ থেকে ১১ শতাংশ অবধি। তবে অবাক করা তথ্য হলো, এনবিএফসি কোম্পানিগুলির সুদের হার প্রায় ৩৬ শতাংশ! প্রসেসিং ফি এর ক্ষেত্রেও দেখা গেছে বিরাট পার্থক্য। আর এই সকল কারণেই কপালে ভাঁজ পড়ছে সাধারণ মানুষের। দীর্ঘদিন এই সমস্যার মুখোমুখি হয়ে প্রতিকার খুঁজছেন তারা।
সোনা বন্ধক নেওয়ার আগে কোন কোন বিষয় গুলি খেয়াল রাখতে হবে?
তাই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-এর তরফে ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষ, স্বর্ণ ঋণ গ্রাহকদের জানানো হচ্ছে, স্বর্ণ ঋণ নেওয়ার আগে কিছু বিষয়ে আপনাদের দেখে বুঝে নিতে হবে। যেমন প্রথম হলো- আপনাদের বিভিন্ন কোম্পানি গুলির মধ্যে তুলনা করতে হবে যে কোন কোম্পানি নির্দিষ্ট পরিমাণ সোনার জন্য কত টাকা ঋণ দিচ্ছে। লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রসেসিং ফি কত রাখা হচ্ছে। গোল্ড লোন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা কত টাকা সুদ হিসেবে রাখছে। সমস্ত কিছু ভালোভাবে যাচাই করে তবেই ঋণের জন্য আবেদন করুন। চেষ্টা করুন হলমার্ক যুক্ত গয়না ব্যবহার করে লোন নিতে। অথবা লোন নেওয়ার আগে গয়না গুলিকে হলমার্ক করিয়ে নিন। এতে সুদের ক্ষেত্রে আখেরে লাভবান হবেন আপনি।