AC Buying Tips – ১ টন নাকি ১.৫ টন, বিদ্যুৎ বাঁচাতে কোন এসি কিনবেন? কেনার আগেই জেনে নিন, বাঁচবে বিদ্যুৎ কমবে খরচ। মার্চ থেকেই প্রখর সূর্যতাপে পুড়ছে পশ্চিমবঙ্গ। তাপমাত্রার পারদ চড়ছে ক্রমাগত। অত্যাধিক গরমে হাঁসফাঁস দশা বঙ্গবাসীর। গরম সহ্য করে থাকা কার্যত কঠিন হয়ে পড়ছে। এরকম পরিস্থিতি মানুষকে আরও বেশি অলস করে তুলছে। গরমে ঘামে, ঘর থেকে বের হতে চাইছে না মানুষ। প্রখর সূর্যতাপ তাপমাত্রা যত বাড়ছে, তত বেশি এসি কেনার ধুম পড়ছে। এদিকে এসি কেনার অর্থ ডবল খরচ। একদিকে যেমন মোটা টাকা খসিয়ে এসি কিনতে হচ্ছে, তেমনি বিদ্যুতের বিল দেখে চক্ষু চড়কগাছ মধ্যবিত্তের। আসলে এসি কেনার সময় কিছু ভুল করছেন সবাই। সেসব ভুল শুধরে নিলে খরচ কমে যেতে পারে অনেকটাই। রোদ্দুরের চোখরাঙানি দেখে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এই বছর তাপমাত্রা রেকর্ড জায়গায় যাবে। এপ্রিল থেকে যে হারে উষ্ণতা বাড়ছে, তাতে টিকে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। আর উষ্ণতা যত বাড়ছে তত বেশি অপরিহার্য হয়ে পড়ছে এয়ার কন্ডিশনের। প্রাকৃতিক উষ্ণতাকে কমাতে কৃত্রিম ভাবে পরিবেশ ঠান্ডা করার পথে হাঁটছেন আমজনতা। অত্যাধিক গরম সহ্য করতে না পেরে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে বসছে এসি।
এতদিন পর্যন্ত মধ্যবিত্তের গরম কাটতো ফ্যান অথবা স্ট্যান্ড ফ্যান হাওয়ায়। কিন্তু গরমের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে চাহিদা বদলেছে মানুষের। বলাই বাহুল্য গরমের কাছে হার মেনেছে ফ্যান, স্ট্যান্ড ফ্যান।আবহাওয়া দপ্তর আগেই সতর্ক করেছে যে, এই বছর তাপপ্রবাহ আরো বেশ কিছুদিন ধরেই চলবে। তাই গরমের কাছে হার মেনে অগত্যা ভিন্ন পথে হাঁটছে আমজনতা। গরম থেকে বাঁচতে আপন করছেন এসি। তুলনায় স্বল্প পুঁজি এসি কিনেই অত্যাধিক গরমের হাত থেকে বাঁচতে চাইছেন তাঁরা।
আগে মধ্যবিত্তদের মধ্যে এয়ার কন্ডিশনার কেনা বিলাসিতা ছিল। কিন্তু এখন বিলাসিতা ভুলে আবশ্যক হয়ে উঠেছে এয়ার কন্ডিশনের লাগানো। কিন্তু শুধুমাত্র এসি লাগালেই যে হবে তা নয় এসি কেনার আগে কয়েকটা বিষয় জেনে নেওয়া খুব জরুরী। তা না হলে উর্ধ্বমুখী বিদ্যুতের বিল পকেট ফাঁকা করে দেবে খুব সহজেই। সাধারণত এয়ার কন্ডিশনার অনেক বেশি বিল কাটে। ঘর কৃত্রিম ভাবে ঠান্ডা করতে গিয়ে, চড়া বিদ্যুত বিল কপালে ভাঁজ ফেলে মধ্যবিত্তের। তাই এসি কেনার আগে যে যে বিষয়গুলি জেনে নেওয়া জরুরী, আমরা আজ সেই বিষয়গুলি নিয়েই আলোচনা করব। যাতে এসি কেনার পরে আপনার খরচ সাধ্যের মধ্যে থাকে।
এসি কেনার পরেও মধ্যবিত্তের কপালে ভাঁজ কমে না। মাসে বিদ্যুতের বিল দিতে গিয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে সবারই। আসলে এসি কেনার আগে যে যে বিষয়গুলি খেয়াল রাখা জরুরী, এগুলি মানা হয় না বলে উল্টো খরচ হয়ে পড়ে। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ওজনের এসি বিক্রি হয়। আপনার ঘরের জন্য কোনটা জরুরী আপনাকে সেটা বুঝে কিনতে হবে। এসি চালালে যে বিদ্যুতের ঊর্ধ্বমুখী মাসের শেষে আসে সেটাও কিন্তু কমে যেতে পারে। কিছু জরুরী টিপস মানলেই এসির হাওয়া আর পকেটের টাকা উভয় থাকবে। আপনিও যদি এসি কিনবেন বলে পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আমাদের প্রতিবেদনটি পড়ে নিন। নিঃসন্দেহে উপকার হবে আপনার।
গরম পড়তেই বাজারে এক টন, দেড় টনের এসি বিক্রি হচ্ছে। কিভাবে বুঝবেন আপনার ঘরের জন্য কোনটা জরুরী? অনেকেই ভাবেন দোকানদার যেটা বলবে সেই অনুযায়ী এসে কিনে আনবেন। কিছু মনে রাখবেন, ব্যবসায়িক খাতিরে তারা কিন্তু তাঁদের লাভ দেখেই বলবে। আর আপনাকে এসি কিনতে হবে আপনার প্রয়োজন অনুসারে, নিজের লাভ দেখে। আসলে এসির টন বলতে বোঝায়, কোন এসিতে বেশি ঠান্ডা হবে, এর পাশাপাশি ইলেকট্রিক বিল আসবে বেশি। অনেকেই যে ভুলটা করে আপনি সেটা করবেন না। বেশি টনের এসি কেনার মানে ঘর যেমন বেশি ঠান্ডা থাকবে, তেমন কিন্তু আপনার বৈদ্যুতিক বিল বেশি আসবে।
এসি কেনার আগে আপনার ঘরের আকার, কত তলায় থাকেন, আপনার এলাকার তাপমাত্রা কত এই বিষয় গুলি বিবেচনা করে নিতে হবে। যদি আপনি টপ ফ্লোরে থাকেন তাহলে স্বাভাবিকভাবেই উষ্ণতা বেশি হবে। আর যদি নিচের তলায় থাকেন, তাহলে টপ ফ্লোরের তুলনায় আপনার ঘর কিছুটা ঠান্ডা হবে।
মোটামুটি বলা যায়, যদি আপনার ঘর ১০০-১২০ স্কোয়ার ফুট হয়, তাহলে ১-টন এসি কেনা উচিত। যদি আপনার ঘর ৮০-১০০ স্কোয়ার ফুট ঘর হয়, তাহলে কিনুন ০.৮ টনের এসি। আবার যদি আপনার ঘরের মাপ ১৩০-২০০ স্কোয়ার ফুট হয়, তাহলে ১.৫ টন কেনা ঠিক হবে। বাড়ির হল রুমে যদি এসি লাগাতে চান, আর যদি সেই হলের সাইজ ২৫০ স্কোয়ার ফুট হয়, তাহলে ২ টন এসি লাগানো যেতে পারে। আপনার ঘরের সাইজ অনুযায়ী কোন ধরনের এসি কেনা পারফেক্ট হবে সেটা যদি বিবেচনা করতে চান, তাহলে একটা অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাপ্লিকেশনটির নাম AC Tonnage Calculator। আপনি ফ্রি টুল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। বিদ্যুতের বিল কমাতে আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। দিনে রাতে এসিকে অপরিহার্য করবেন না।চালানোর পাশাপাশি ফ্যান ও চালিয়ে দিন। এতে ঘর ঠান্ডা থাকবে। আপনার বিদ্যুতের বিল অনেকটা কম আসবে।