কবে কমবে সুদের হার, অপেক্ষায় ঋণগ্রহীতারা!

চড়া মূল্যবৃদ্ধিতে নাকাল সাধারণ মানুষ! সুদের হার কমবে কবে? কি জানাচ্ছে রিজার্ভ ব্যাংক? দেশের মূল্যবৃদ্ধির প্রকোপ চলছে দিনের পর দিন ধরে। দৈনন্দিন জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে খেয়ে পড়ে বাঁচবেন কিভাবে, তা ভাবতে গিয়ে কপালে ভাঁজ মধ্যবিত্তের। মূল্যবৃদ্ধির ফলে দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে গেলে মাথায় হাত পড়ছে সবার। তাছাড়া ঋণ নিতে গেলেও চিন্তায় পড়ছেন আমজনতা। দেশের সাধারণ মানুষ এখন অপেক্ষায় রয়েছেন কবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া সুদের হার কমাবে। কি জানা যাচ্ছে এই বিষয়ে? আরবিআই এর তরফে কী জানানো হলো? জেনে নিন। বছরখানেক ধরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার রেপো রেট ৬.৫ শতাংশে থমকে আছে। যার ফলে বিভিন্ন ব্যাংকে ঊর্ধ্বমুখী ঋণের সুদ। বর্তমানে মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য, অথবা কোনো প্রয়োজন সাপেক্ষে ঋণ নেওয়ার দরকার পড়েই। এদিকে চড়া সুদের‌ কারণে ঋণ নেওয়ার আগে দশবার চিন্তা করছেন দেশের মানুষ। এই পরিস্থিতি থেকে কবে রেহাই মিলবে তা নিয়ে ধন্দে ভুগছেন তাঁরা। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, জীবনধারণ ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে।

ইদানিং কোন ব্যবসা শুরু করা হোক কি বিশেষ কোনো ক্ষেত্রে টাকা মেটানো। ঋণের প্রয়োজন পড়ে না এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। কিন্তু ঋণ নিতে গেলে যে সুদের হার বইতে হচ্ছে, তাতে ঋণ দেওয়ার আগে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে কপালে। তাই এখন অনেকেই ঋণ নিচ্ছেন না। অথবা ঋণের
সুদের হিসেব করে তবেই সেই অনুযায়ী লোন নিচ্ছেন। এখন কথা হচ্ছে, কতদিন ধরে চলবে এই পরিস্থিতি? রীতিমতো চিন্তায় দেশের মানুষ। গত বছরের ফেব্রুয়ারির পর থেকে দেশে আর সুদ বাড়ায়নি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। তবে বিপুল সুদের সমস্যা চলছেই। ‌চড়া হারে সুদ গুনতে গিয়ে নাকাল হচ্ছেন আমজনতা। দেশবাসী -র এই সমস্যার কথা অনেকদিন ধরেই আলোচিত হচ্ছে এবং আরবিআই এর কাছে সেই রিপোর্ট জমাও পড়েছে। শোনা যাচ্ছিল, শীঘ্রই রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার সংক্রান্ত বিষয়ে মিটিং ডাকবে। সূত্রের খবর, এদিন ছিল আরবিআই এর ঋণনীতি কমিটির বৈঠক। চলতি সপ্তাহের শুক্রবার ঘোষণা হতে পারে সুদ নিয়ে রিজার্ভ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত।

গত ৩১ শে মার্চ আগের অর্থবর্ষ শেষ হয়েছে। সোম বার ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে নতুন অর্থবর্ষ ২০২৪-২৫। তাই সপ্তাহ পড়তেই মিটিং ডাকলো রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। তবে বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে বলছেন, এবারেও রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবে। কারণ মূল্যবৃদ্ধির হার এখনো তাদের লক্ষ্য অনুযায়ী ৪ শতাংশের কাছে নামেনি। ঋণ কমিটির মতামতে কেউ কেউ সুদ কমানোর পক্ষে থাকতে পারেন। তবে অধিকাংশ জনই ঝুঁকি নিতে চাইবেন না বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। ঘটনা প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলেন খুব সম্ভবত এবার রিজার্ভ ব্যাংকের লক্ষ্য হবে পণ্যের দাম কমিয়ে সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দেওয়া। কারণ মূল্যবৃদ্ধির কারণে কার্যত ভুগছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু সুদ এখনই কমাবে বলে মনে করা হচ্ছে না। অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার আরও বলেন, “গত অর্থবর্ষের প্রথম তিনটি ত্রৈমাসিকেই জিডিপি বৃদ্ধির হার ছাড়িয়েছে ৮ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, আর্থিক বৃদ্ধি মোটের উপর ভালোই।” অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিজার্ভ ব্যাংক এই বছর সুদের হার সেভাবে কমাবে বলে মনে হয় না। এখন দেখা যাক কি সিদ্ধান্ত জানায় আরবিআই।

আবার, অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরী বলছেন অন্য কথা। সংবাদমাধ্যমের একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, অর্থনীতিবিদ বলেছেন সুদ নিয়ে রিজার্ভ ব্যাংক সাধারণত দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়। একটি যেমন দেশীয়, অন্যটি তেমনি বিদেশি। রিজার্ভ ব্যাংকে তরফে একটি বিষয়ে দেখা হবে যে, ব্রিটেন আমেরিকার মতো দেশগুলি সুদের হার কমাচ্ছে কিনা। যদি ওই দেশ গুলি সুদের হার না কমায়, তাহলে রিজার্ভ ব্যাংক ও সুদের হার কমানোর পথে হাঁটবে না। ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৫.১ শতাংশ। রিজার্ভ ব্যাংক চাইবে তা আরও কমাতে। এদিন বৈঠকের পর রিজার্ভ ব্যাংক কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তা এখনো সামনে আসেনি। সাধারণ মানুষ অপেক্ষায় আছেন রিজার্ভ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত জানার। শুক্রবার জানা যাবে আরবিআই এর সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত শোনার জন্যই অপেক্ষায় দেশের আমজনতা ও ঋণগ্রহীতারা।

এই বিষয়ে আপনার কি মতামত? কতটা সুবিধা হবে প্রত্যেকের? অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নিন। পাশাপাশি আপনারা আমাদের থেকে আর কি কি ধরনের নিউজ পেতে চান সেই বিষয়েও কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। আজকে এই পর্যন্তই। আবার আপনাদের সামনে পরবর্তীতে তুলে ধরব এমন কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

Leave a Comment