সম্প্রতি কেন্দ্র সরকার মেয়েদের শিক্ষার হার বাড়াতে নতুন একটি প্রকল্প চালু করেছেন। প্রকল্পটির নাম হল বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা। কেন্দ্রীয় সরকার দেশের সাধারণ মেয়েদের এই প্রকল্পের মাধ্যমে পড়াশোনার যাবতীয় খরচ বহন করবে। এর ব্যাপারে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
কিছু উদ্দেশ্যের জন্যই বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা স্কিমটি কেন্দ্রীয় সরকার চালু করেন। এই বালিকা সমৃদ্ধি যোজনার কিছু উদ্দেশ্যগুলি হল :-
- বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাকে দায়ী করা হয় বাড়িতে কোনও কন্যা সন্তানের জন্ম হলে। এই স্কিম চালু করা হয়েছে তার মায়ের প্রতি পরিবারের কোন খারাপ প্রভাবের পরিবর্তনের জন্য।
- কন্যা সন্তানদের অল্প বয়সে বিবাহ বন্ধ করতে এটি চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
- এই স্কিমটি চালু করা হয়েছে মেয়েরা যাতে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে স্বাবলম্বী হতে পারে।
- অনেক বাবা-মা পড়াশোনায় অনেক খরচের জন্য কন্যা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য পাঠাতে চান না। কেন্দ্রীয় সরকার এই স্কিমটি চালু করেছেন বিদ্যালয়ে যাতে কন্যা সন্তানদের আগমন বেশি হয়।
এই প্রকল্পে কারা আবেদন করতে পারবেন?
আপনার কন্যা সন্তান জন্ম হলেই সে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে। যদিও এই প্রকল্প ১৯৯৭ সালে মেয়েদের সার্বিক কল্যাণের কথা ভেবে প্রচলন করা হয়েছিল তবে এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ এই প্রকল্প সম্পর্কে অবগত না থাকার কারণে নতুন করে এই প্রকল্পটির ব্যাপারে প্রচার করা হচ্ছে।
অনুদান পাবে কত টাকা?
আপনার ঘরে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলেই বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা প্রকল্পে তাকে ৫০০ টাকা অনুদান দেওয়া হবে। আর সেই সন্তান যখন স্কুলে ভর্তি হবে তখন থেকে সে এই প্রকল্পের টাকা পেতে শুরু করবে। বছরের সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত। তবে ক্লাস অনুযায়ী কন্যা সন্তানদের আর্থিক অনুদানের পরিমাণও ভিন্ন হয়। যেমন :
- আপনার সন্তান যদি প্রথম শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণীর মধ্যে পাঠরত হয় তাহলে সে বছরে ৩০০ টাকা করে পাবে।
- যদি সে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত হয় তাহলে বছরে ৫০০ টাকা করে পাবে।
- পঞ্চম শ্রেণীতে পাঠরত হলে ৬০০ টাকা অনুদান পাবে।
- ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শ্রেণীতে পাঠরত হলে বছরে ৭০০ টাকা অনুদান পাবে।
- অষ্টম শ্রেণীতে পাঠারত হলে সে ৮০০ টাকা পাবে।
- আর যদি সেই কন্যা সন্তান নবম ও দশম শ্রেণীতে পাঠরত হয়, তাহলে বছরে ১ হাজার টাকা অনুদান পাবে।
তবে এই সম্পর্কে বিশেষ উল্লেখযোগ্য একটি বার্তা হল কন্যার বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত সে টাকা তোলা যাবে না। নির্দিষ্ট একাউন্টে এই টাকা জমা থাকবে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক এই সুবিধা শুধুমাত্র কন্যা সন্তান স্কুলে ভর্তি করলেই দেওয়া হবে নচেৎ নয়। আর বিশেষ করে দেশের বিপিএল তালিকাভুক্ত মেয়েরা এর সুবিধা পাবে। মাত্র দুইজন মেয়ে প্রতিটি পরিবার থেকে এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে।
জেনে নিন কি কি ডকুমেন্টস লাগবে:
- আবেদনকারীর জন্ম সার্টিফিকেট
- আবেদনকারী কোন শ্রেণীতে পাঠরত সে সংক্রান্ত প্রমাণ পত্র।
- পিতা-মাতার বাসস্থানের প্রমাণ পত্র।
- আবেদনকারীর অভিভাবক ও অভিভাবিকার আধার কার্ড।
- আবেদনকারীর আধার কার্ড বা রেশন কার্ড।
কিভাবে এই প্রকল্পে আবেদন করবেন?
অনলাইন এবং অফলাইন দুই মাধ্যমেই আবেদন করা যাবে এই প্রকল্পের জন্য। এটির নির্দিষ্ট আবেদন পত্র ডাউনলোড করে ফিলআপ করতে হবে অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে। তবে অফলাইনে আপনি যদি আবেদন করতে চান তাহলে ফরম সংগ্রহ করতে হবে বিডিও অফিস থেকে। তারপর সেটি ফিলাপ করে জমা করতে হবে। তবে এই প্রকল্প সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার জন্য আপনাকে এই প্রকল্প-এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটটি ফলো করতে হবে।