শরীরের যাবতীয় ক্রিয়াকান্ড নিয়ন্ত্রিত হয় মস্তিষ্ক দ্বারা। আর তাই রোজকার ডায়েটে (Brain Boosting Foods) রাখুন বেশ কিছু পুষ্টিকর খাবার। বাড়বে স্মৃতিশক্তি।শিশু যখন মাতৃগর্ভে থাকে, তখনই শুরু হয় তার মস্তিষ্কের বিকাশ এবং তা কিন্তু চলতে থাকে একেবারে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত। মস্তিষ্কের বিকাশ মানবশরীরের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শরীরের বাকি কাজ নিয়ন্ত্রিত হয় এই মস্তিষ্কের মাধ্যমেই। শরীরের সামগ্রিক বিকাশ কিন্তু নির্ভর করে মস্তিষ্কের উপরই। আর তাই শিশুর স্মৃতিশক্তি এবং শেখার ক্ষমতার উপরও কিন্তু রয়েছে মস্তিষ্কের প্রভাব।
গর্ভাবস্থায় মা যা খায়, সেখান থেকেই পুষ্টি যায় শিশুর শরীরে। ফলে গর্ভাবস্থায় মায়ের সবথেকে বেশি নজর দেওয়া উচিত এই খাবারের উরই। কারণ তা সন্তানের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জ্ঞান, একাগ্রতা, বোধ-বুদ্ধি সবই নিয়ন্ত্রণে রাখে মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক সজাগ থাকলে তবেই আমরা যে কোনও কাজ নিখুঁত ভাবে করতে পারি। যেহেতু মস্তিষ্কের বিকাশের এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাই আমাদের রোজকার খাওয়া-দাওয়াও (Brain Boosting Foods) কিন্তু হতে হবে পুষ্টিযুক্ত।
মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় (Brain Boosting Foods) খাবার হল মাছ, শাকসবজি, ফল ইত্যাদি। এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এসব যাতে তালিকায় থাকে সেদিকেও কিন্তু নজর দিতে হবে। তবে নিয়মিত ভাবে বিভিন্ন বাদাম, শুকনো, ফল এবং সবজি কিন্তু খেতেই হবে। শরীরের চাহিদা পূরণে খনিজ, অ্যামিনো অ্যাসিড আসে এই খাবার থেকেই।
অ্যালঝাইমার্স, ডিমনেশিয়া এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের। এছাড়াও মানসিক চাপ, ডিপ্রেশনের হাত থেকে শরীরকে সুস্থ রাখে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। যাঁদের কোনও রকম সংক্রমণ জনিত সমস্যা রয়েছে তাঁদের সকলকেই কিন্তু ফ্যাটি অ্যাসিড নিয়মিত (Brain Boosting Foods)খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। দেখে নিন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা চালু রাখতে রোজ যে সব খাবার অবশ্যই খাবেন।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাও ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আর এর জেরে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এর ফলে ডিমেনশিয়া বা অ্যালজাইমার্সের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমা আটকানোটা খুব জরুরি। আর এই কাজে সাহায্য করতে পারে কয়েকটি খাবার (Brain Boosting Foods)। বয়স বাড়লেও আপনি আপনার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে ভাল রাখতে পারেন।
হালে ওয়াশিংটন ইউনির্ভাসিটির গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কয়েকটি খাবার (Brain Boosting Foods) আছে যা স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মস্তিষ্ককে অন্য রোগ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। দেখে নেওয়া যাক, এই খাবারগুলি কী কী।এমন কিছু খাবার আছে (Brain-Boosting Foods) যা মস্তিষ্ক সতেজ রাখতে অত্যন্ত সাহায্য করে। এই সব খাবার খেলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ে। শুধু তাই নয় স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে এই খাবার। তাই ব্রেইনের ক্ষমতা বাড়াতে ডায়েটে কোন কোন খাবার রাখবেন তা জেনে নিন।
Brain Boosting Foods
বাদাম এবং বীজ জাতীয় খাবার
বাদাম এবং বীজ জাতীয় খাবার ভিটামিন ই-এর ভাল উৎস। সঠিক মাত্রার (Brain Boosting Foods) ভিটামিন ই মস্তিষ্কের দক্ষতা হ্রাস পাওয়া কমায়। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে দিনে ১ আউন্স বাদাম যেমন- আখরোট, কাজু, পেস্তা, চিনা বাদাম এবং কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, তিল বীজ খেতে পারেন।
অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডো মস্তিস্কের উন্নতিতে সাহায্য করে এটি। অ্যাভোকাডো একটি (Brain-Boosting Foods) ফ্যাটি ফল, কিন্তু এটি মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা স্বাস্থ্যকর রক্ত প্রবাহে সাহায্য করে।
Parenting Tips – চঞ্চল সন্তানকে শান্ত, নম্র ও ভদ্রতা শেখাবেন কিভাবে? জেনে নিন সহজ উপায়।
গোটা শস্য
ওটসমিল, পাউরুটি, বাদামী চালের মত গোটা শস্যদানা (Brain Boosting Foods) হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এরই সঙ্গে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যও রক্ষা করে।
কড়াইশুঁটি
কড়াইশুঁটি (Brain Boosting Foods) রক্তে চিনির মাত্রাকে স্থিতিশীল রাখে। গ্লুকোজ হল মস্তিষ্কের জ্বালানি। যদিও মস্তিস্ক গ্লুকোজ সংরক্ষণ করতে পারে না, এটি শক্তির ক্রমাগত প্রবাহের উপর নির্ভর করে এবং মটরশুঁটি এটি দিতে পারে।
ডালিম
ডালিমে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে বলে (Brain Boosting Foods) এটি ফ্রি রাডিক্যালের আক্রমণ থেকে মস্তিস্ককে রক্ষা করতে পারে।
কফি
কফি (Brain Boosting Foods) ব্রেনের ক্ষমতা বাড়াতে এই পানীয়টি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। কফিতে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর মস্তিষ্কের ক্ষমতাকে এতটাই বাড়িয়ে তোলে যে অ্যালজাইমারসের মতো রোগ ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না। সেই সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা কমে, শর্ট টার্ম মেমরি জোরদার হয়ে ওঠে এবং পার্কিনসনের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকে না।
চা ঠান্ডা অথবা গরম সদ্য তৈরি করা চায়ে পরিমিত পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে যা মস্তিস্কের শক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়াও চায়ে ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রক্ত প্রবাহের উন্নতিতে সাহায্য করে।
ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেটে (Brain Boosting Foods) শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান এবং ক্যাফেইন-সহ প্রচুর প্রাকৃতিক উদ্দীপক থাকে যা মনোযোগ বৃদ্ধি করে। এবং অ্যান্ডোরফিন এর উৎপাদনকেও উদ্দীপিত করে যা মেজাজের উন্নতিতে সাহায্য করে।
তৈলাক্ত মাছ
তৈলাক্ত মাছ (Brain Boosting Foods) খাওয়া মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ উপকারী। সার্ডিন, টুনা, ম্যাকারেল , স্যামন, প্রভৃতি মাছ নিয়মিত খাওয়া উচিত।
নারকেল তেল
নারকেল তেল (Brain Boosting Foods) এর কিছু উপাদান নিউরনের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত নানাবিধ ক্ষতিকারক উপাদান যাতে মস্তিষ্কের ভিতরে কোনও ক্ষতি সাধন করতে না পারে, সে দিকেও খেয়াল রাখে।
ব্রকোলি
শীতে ব্রকোলিটি (Brain Boosting Foods) প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। সালফারাফেন নামক একটি উপাদানে ভরপুর এই সবজিটি খাওয়া মাত্র শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে ব্রেন সেলের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
Winter Decorating Ideas – এইভাবে বাড়ির ইন্টেরিয়র ডিজাইন বদলে ফেলুন। শীত ঘরে ঢুকতেই পারবে না।
ডিম
ডিমে (Brain Boosting Foods) রয়েছে প্রচুর মাত্রায় কোলিন এবং উপকারি কোলেস্টেরল, যা নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে ব্রেনের ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ডিম খেলে দেহে বিশেষ এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা ব্রেন সেলকে গার্ড করে যাতে কোনওভাবে ক্ষতি না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখে।
আখরোট
আখরোটে (Brain Boosting Foods) রয়েছে প্রচুর মাত্রা ভিটামিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, কপার, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার নানাভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগে। সেই সঙ্গে দেহে উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বাড়ায়। ফলে সবদিক থেকে মস্তিষ্কের উপকার হয়।
হলুদ
এই (Brain Boosting Foods) প্রকৃতিক উপাদানটি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুণ কাজে আসে। হলুদে উপস্থিত বেশি কিছু কার্যকরি উপাদান একদিকে যেমন মস্তিষ্কের ভিতরে প্রদাহ কমায়, তেমনি অন্যদিকে বুদ্ধির বিকাশেও সাহায্য করে।
পালং শাক
পালং শাকে (Brain Boosting Foods) উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন কে, ফলেট এবং লুটেইন ব্রেনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে দারুণ কাজে আসে। ফলে নিয়মিত এই শাকটি খেলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
টমেটো
টমেটোতে (Brain Boosting Foods) উপস্থিত ক্যারোটিনয়েড, লাইরোপেন এবং বিটা-ক্যারোটিন ব্রেনে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বার করে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তির উন্নতি হয়, বুদ্ধি এবং মনোযোগ ক্ষমতার উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না।
মাছ
মাছে (Brain Boosting Foods) বেশি তেল রয়েছে মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নামে একটি উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দারুণ কাজে আসে। আসলে এই উপাদনটি ব্রেন সেলের ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের যে অংশটা স্মৃতিশক্তির আধার, সেই অংশের ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল (Brain Boosting Foods ) এই তেলটিতে রয়েছে পলিফনল নামে একটি উপাদান, যা ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুণ কাজে আসে। পলিফেনল নামক উপাদানটি নার্ভ সেলের কর্মক্ষমতা বাড়য়ে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।
শতমূলী
এই (Brain Boosting Foods) প্রকৃতিক উপাদনটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার এবং এমন কিছু উপাদান, যা শরীরে মস্তিষ্কের উপকারি লাগে এমন ব্যাকটিরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি করে। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত ফলেট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদানও এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
Old Fashion Dresses – পুরোনো স্টাইলের মেলবন্ধনে বাজারে এলো নতুন ড্রেস। পড়লেই সকলের নজরে পড়বেন।
জাম
এই (Brain Boosting Foods) ফলটিতে উপস্থতি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ব্রেন সেল যাতে শুকিয়ে না যায় সে দিকে খেয়াল রাখে। সেই সঙ্গে ব্রেনের ভিতরে প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে নানাবিধ ব্রেন অসুখকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যাঁদের পরিবারে অ্যালজাইমারস বা ডিমেনশিয়ার মতো মস্তিষ্কের রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাঁরা যদি প্রতিদিন জাম খেতে পারেন, তাহলে দারুন উপকার পাবেন।
বিট
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন বিটের রস (Brain Boosting Foods) খেলে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তির সাথে জড়িত অংশে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। এই কারণেই ডাক্তাররা প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতিদিন বিটের রস বা বিটের স্যালাড খাওয়ার পরামর্শ দেন।
কুমড়োর বীজ
কুমড়োর বীজে (Brain Boosting Foods) শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্য়ান্ট রয়েছে যা শরীরের ফ্রি দ্রুত ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও কুমড়োর বীজে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক, কপার যা স্নায়ু সংকেত ও স্মৃতিশক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পিনাট বাটার
পিনাট বাটারের (Brain Boosting Foods) মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই। যা আমাদের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং স্নায়ুর চাপ কমায়। এছাড়াও ভূমিকা রয়েছে এনজাইম নিঃসরণে। যেখান থেকে মস্তিষ্ক ঠিক ভাবে কাজ করতে পারে।
ওটস
ওটস Brain Boosting Foods মস্তিষ্কের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হল ওটস। ওটসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ই, বি কমপ্লেক্স এবং জিঙ্ক। এছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। স্ট্রেস, অ্যালঝাইমার্স, উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারুণ ভূমিকা রয়েছে এই ওটসের।
ভিটামিন সি
যে কোনও রকম ভিটামিন সি (Brain Boosting Foods) সমৃদ্ধ ফলও কিন্তু অবশ্যই রাখবেন ডায়েটে। এই ফল যেমন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তেমনই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোশগুলিকে যে কোনও রকম আঘাত থেকে রক্ষা করে। আর তাই রোজকার ডায়েটে অবশ্যই রাখুন ভিটামিন সি।