চিরপরিচিত দার্জিলিং, গ্যাংটক ভুলে যান! গরমে পাহাড় যেতে চাইলে পাড়ি জমান এই তিন শৈলশহরে। বাঙালি ঘুরতে যাওয়ার নামেই এক পায়ে খাড়া। তবে ঘুরতে যেতে চাইলেই তো আর হুট করে ঠিক করা যায় না! বাঙালিকে নিয়ে একটা প্রচলিত প্রবাদ আছে, বাঙালি নাকি ঘুরতে যাওয়ার নামেই ‘দীপুদা’। অর্থাৎ দীঘা, পুরী দার্জিলিং বাদ দিয়ে আর এক পাও এগোতে চায়না। যদিও কালের গতিতে চিরপ্রচলিত মিথকে মিথ্যে প্রমাণ করেছে তাঁরা। এক পা, এক পা, করে নানান অফবিট ডেস্টিনেশনে পাড়ি জমাচ্ছে বাঙালি। তাহলে শৈলশহরের ক্ষেত্রে একই জায়গায় বারবার ঘোরা কেন? ঘুরে আসুন এই নতুন জায়গা থেকে।
বছরের নানান সময় ঘুরতে যাওয়ার নামে মন ছুটি ছুটি করে। ঘুরতে যাওয়া ঠিকানা খুঁজতে কালঘাম ছোটে অনেকেরই। তারপর শেষমেশ ঘুরে ফিরে সেই পরিচিত জায়গায় বার কয়েক ঘুরে আসা। পরিবেশে যে হারে গরম পড়েছে, সবাই চাইছেন একটু ঠান্ডা খুঁজতে শৈলশহরে পাড়ি জমাবেন। সেই ভাবনা থেকেই দার্জিলিং, গ্যাংটক মুখী হচ্ছেন অনেক পর্যটক। সিকিম ও উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্প যার কারণে আরো অনেক বেশি বিকশিত হচ্ছে। ফুলে ফেঁপে উঠছে পর্যটন শিল্প।
গরম বাড়ছে বলে দক্ষিণবঙ্গে ছুটি পড়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই গরমের ছুটি পড়ে যাবে রাজ্যে। স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকবে বলে ছুটির আমেজ চারিদিকে। এরকম পরিস্থিতিতে সামার ভ্যাকেশন সুন্দর করে কাটাতে, পাহাড়ের প্ল্যান বানাচ্ছেন সবাই। সেই প্ল্যানে নিশ্চয়ই যুক্ত হচ্ছে বেশ কিছু চিরপরিচিত জায়গার নাম। তালিকার উপরের দিকে রয়েছে দার্জিলিং, গ্যাংটকের মত শৈলশহর।
এই গরমে দুটি শৈলশহরে যে হারে ভিড় পড়ে তাতে ঘুরতে গিয়ে এতটুকু আনন্দ পাওয়া যায় না। তাই সবার মত একই পথে না হেঁটে আপনি বেছে নিতে পারেন ভিন্ন রূট। অর্থাৎ, এই বছর না হয় আপনার ঘুরতে যাওয়া তালিকা থেকে বাদ পড়ুক দার্জিলিং আর গ্যাংটক! না না, ঘাবড়াবেন না! আপনাকে ঘুরতে যাওয়ার জন্য মোটেই মানা করছি না। বরং আপনাকে দিচ্ছি কিছু ঠিকানার সন্ধান। এই দুই শৈলশহর হতে পারে চলতি বছরে আপনার সামার ভ্যাকেশনের আলটিমেট প্ল্যান।
আসলে আমাদের একঘেয়ে জীবনে কিছুটা সুস্থতা আনতে পারে ভ্রমণ। ঘুরতে গেলে মানুষের মন ভালো থাকে। একটানা ব্যস্ততার মাঝখানে একটু মন চেঞ্জ করাও জরুরী। কখনো সোলো ট্রিপ, কখনো বন্ধুদের সঙ্গে, তো কখনো সপরিবারে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে তার আগেই একটা গোটা রুট ম্যাপ তৈরি করে নেওয়া ভালো। যদি এই বছরে গরমে আপনার ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান থাকে, তাহলে আপনার তালিকায় রাখতে পারেন এই তিন শৈলশহর। চলুন সবটা জেনে নেওয়া যাক। খুব বেশি পরিচিত না হওয়ায় এই জায়গা গুলিতে ভিড় কম, নিরিবিলিতে কাটাতে পারবেন আপনার সামার ভ্যাকেশন।
১) কুর্গ
তালিকার প্রথমেই আসছে ভারতবর্ষের কর্ণাটক রাজ্যের কুর্গ। পশ্চিমঘাট পর্বতের ঢালে কোদাগু জেলায় পাহাড়ঘেরা জায়গাটির সৌন্দর্য এক কথায় মুগ্ধ করবে আপনাকে। উঁচু নিচু পাহাড়,
পাহাড় ঘেরা পথ, বিরামহীন স্বচ্ছ ঝর্ণা, একরের পর একর জুড়ে কফির বাগান। মনোরম সৌন্দর্যে ভরা এই জায়গাটি যেন এক টুকরো স্বর্গ। নিরিবিলি কোলাহলমুক্ত এই জায়গা হাতছানি দেয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। গরমে এখানে থাকে শীতল আমেজ।
চারিদিক সবুজে সবুজ ঢাকায় চোখ জুড়বে আপনার। এর পাশাপাশি কাবিনি নদীর স্নিগ্ধতা ছোঁবে আপনার হৃদয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত স্থানের সাইট সিনে ঘুরে দেখে নিতে পারেন রাজাসিট পার্ক, অ্যাবি ঝর্না, ওমকারেশ্বর মন্দির, তালকাবেরী। এছাড়াও ঘুরে দেখতে হবে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে নাগরহোল জাতীয় উদ্যান, দুবারে হাতি সংরক্ষালয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে অ্যাডভেঞ্চার করার সুযোগ মিলবে এখানে। রয়েছে রিভার রাফটিং, জ়িপলিং, কায়াকিং ও ট্রেকিংয়ের সুযোগও। সবমিলিয়ে আপনার সামার ভ্যাকেশন হয়ে উঠবে জমজমাট।
২) সোলাং ভ্যালি
হিমাচল প্রদেশ বলতেই মানুষের মাথায় ঘোরে সিমলা, কুলু, মানালি। তবে আমরা কিন্তু বলব পরিচিত স্থানগুলির বাইরে সম্পূর্ণ অন্য একটি টুরিস্ট স্পট। মানালি থেকে লেহ-মানালি হাইওয়ে ধরে রোটাং পাস যাওয়ার পথে ১৪ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে পড়ে সোলাং ভ্যালি। হিমাচলের এই স্থান প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আপনাকে মুগ্ধ করবে। সমুদ্র সমতল থেকে ৮৪০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থিত হিমাচলের এই সুন্দরী স্থান, দুচোখ ভরে উপভোগ করতে পারবেন আপনি। বছরের সব সময় জমজমাট থাকে এই এলাকা। মিলবে নানা অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের মজাও। প্যারাগ্লাইডিং ছাড়াও ট্রেকিং, ক্যাম্পিং এর মত মজা উপভোগ করতে পারবেন আপনিও। তাহলে আর দেরি কিসের, চটপট বানিয়ে নিন আপনার সামার ভ্যাকেশন প্ল্যান, আর ঘুরে আসুন পাহাড়ের কোলে অপূর্ব সব পর্যটন ক্ষেত্র থেকে।